বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থী পরিষদের আন্দোলন, অবরুদ্ধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন

যেসব লক্ষণ জানান দেবে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে

বাইরে থেকে একেবারে সুস্থ সবল। কেবল দ্রুত হাঁটাহাঁটি বা সিঁড়ি ভাঙলে হাঁপিয়ে উঠছেন প্রায়ই। অবশ্য তা তো কমবেশি সবারই হয়- এমন ভেবেই নিশ্চিন্ত থাকেন অনেকে। কিন্তু বুঝতে পারেন না চুপিসাড়ে রক্তে কখন মিশে গিয়েছে একগাদা খারাপ কোলেস্টেরল। পরে সমস্যা বাড়লে রক্ত পরীক্ষা করালে ধরা পড়ে তার দৌরাত্ম্য।

কোলেস্টেরলের অন্য নাম হলো লিপিড। আরো সহজ করে বললে কোলেস্টেরল হলো রক্তের চর্বি বা ফ্যাট। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও ধমনিসংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেকটাই দায়ী। 

যেকোনো বয়সেই কোলেস্টেরলের সমস্যা হতে পারে। তবে ধূমপান ও মাদক গ্রহণ, দৈহিক পরিশ্রমের অভাব, খুব বেশি মানসিক অস্থিরতা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার ছাড়াও বংশগত কারণে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হতে পারে।

ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, বাড়িয়ে দেয় ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও। পাশাপাশি ধূমপান কমিয়ে দেয় এইচডিএলের মাত্রা। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। অন্যদিকে মদ্যপান মারাত্মক হারে বাড়িয়ে দিতে পারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ। নিয়মিত মদ্যপান ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি করে। বিশেষত যাদের অগ্ন্যাশয় ও লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারইড অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোকের আশঙ্কা।

স্থূলতা: ‘বডি মাস ইনডেক্স’ যদি ৩০ বা তার বেশি হয়ে যায় তবে, কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে ডায়াবেটিস, ডেকে আনতে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা। উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে এই ধরনের সমস্যা থাকলে প্রাণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই। তবে ওজন কমলে কমতে পারে কোলেস্টেরলের সমস্যাও।

খাদ্যাভ্যাস: লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, বেশি তেল রয়েছে এমন খাবার বাড়িয়ে দেয় কোলেস্টেরলের মাত্রা। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনতে খেতে হবে ওটস, কাঠবাদাম। খাওয়া যেতে পারে মাছও। তবে সব কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবারই খারাপ নয়। যেমন ডিমে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে।

শরীরচর্চার অভাব: আলস্য ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মধ্যে কার্যত একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। একটি বাড়লে, বৃদ্ধি পাবে অপরটিও। নিয়মিত শরীরচর্চা কমাতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা। পাশাপাশি শরীরচর্চা করলে নিয়ন্ত্রণে থাকে স্থুলতাও। শরীরচর্চা বলতে কিন্তু শুধু জিমে যাওয়া নয়, নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও সহায়তা করতে পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

উপসর্গঃ যদিও শরীরে কোলেস্টেরলে মাত্রা বাড়লে কোনো উপসর্গ দেখে তা বোঝার উপায় নেই। তবে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে শরীরে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। উচ্চ কোলেস্টেরল ধমনীর উপর চাপ তৈরি করে। যার থেকে ‘পেরিফেরাল আর্টারিয়াল ডিজিজ’-এর ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই প্রকার রোগে ধমনীগুলো সরু হয়ে যায় ফলে রক্ত চলাচল ব্যহত হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত ঠিক মতো পৌঁছাতে পারে না। ফলে শরীরের বিভিন্ন গাঁটে যন্ত্রণা শুরু হয়।

  • কোলেস্টেরল খুব বেড়ে গেলে পায়ের টেন্ডন লিগামেন্টগুলোতে প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে পায়ের ধমনীগুলো সরু হয়ে গেলে পায়ের নিচের অংশ অনেকটা অক্সিজেন-সহ রক্ত পৌঁছতে পারে না। তাতে পা ভারী হয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে সহজেই। পায়ের অসম্ভব যন্ত্রণা শুরু হয়। উরু বা হাঁটুর নিচে পেছনের দিকে ব্যথা হতে পারে। হাঁটার সময়েই এই ধরনের ব্যথা বাড়ে।
  • একই কারণে ঘাঁড় ও হাতের সংযোগস্থলেও ব্যথা হয়। মাঝেমাঝে এমন ব্যথায় আমরা নজেহাল হই। খুব ঘন ঘন একই স্থানে ব্যথা হলে একটু সতর্ক থাকুন।

নিতম্বেও ব্যথা হওয়া উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ হতে পারে। যদি মাঝে মাঝেই নিতম্বে ব্যথা হয় তাহলে কিন্তু সেই লক্ষণ ভালো নয়। এই সব লক্ষণ দেখা দিলে এক বার রক্ত পরীক্ষা করে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা দেখে নেয়া জরুরি।

কলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে করনীয়ঃ

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার সঙ্গে সঙ্গে খ্যাদ্যাভ্যাস বদল করলে রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা কমানো সম্ভব.পশুদেহ থেকে উৎপন্ন খাবার এড়িয়ে চললে শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা কমবে কিন্তু শুধু কলেস্টেরলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমিয়ে নয় খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে.যারা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে কলেস্টেরল কমাতে চান তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দৈনন্দিন খাবারে উপস্থিত স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট থেকে উৎপন্ন ক্যালরির 7% কমিয়ে দেওয়া এবং এমন খাবার খাওয়া যাতে 200 mg-র কম কলেস্টেরল আছে.

খাদ্যাভ্যাসে বদল আনলে (বিশেষত খাবারে স্নেহজাতীয় পদার্থ এবং কলেস্টেরলের মাত্রা কমানো) রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং এই ফলস্বরূপ করনারী আর্টারি ডিজিজের সম্ভাবনা কমে এই মতটিকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে.একটি বিকল্প মতানুযায়ী খাবারে কলেস্টেরলের মাত্রা কমে গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন যকৃত তার প্রতিকার করার চেষ্টা করে কম বা বেশি মাত্রায় কলেস্টেরল উৎপন্ন করে. এই ভাবেই শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে.

এমন প্রমাণও আছে যে সিম্পল শুগার (যা পরিশুদ্ধ চিনি থেকে নেওয়া) এবং পরিশুদ্ধ দানাশস্যসমৃদ্ধ খাবার রক্তে LDL কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে. ইনসুলিন নামক এক হরমন যকৃতে উত্তেজক প্রক্রিয়া দ্বারা কলেস্টেরলের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে.অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন রক্তধারায় নিসৃত হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়. যে সব খাবারে প্রাকৃতিক স্নেহজাতীয় পদার্থ এবং প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে তারা ইনসুলিনের নির্গমন হতে দেয় না ফলে কলেস্টেরলও উৎপন্ন হয় না.(কিছু স্নেহজাতীয় পদার্থ যেমন মোনোস্যাচুরেটেড ভেজিটেবেল ফ্যাট রক্তের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনে.)সেই জন্য খাবার থেকে পরিশুদ্ধ চিনি এবং দানাশস্য কমিয়ে দিলে (বা একেবারে বাদ দিলে)রক্তের LDL কলেস্টেরল কমে যায়.


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories