ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম ।। মিসেস আফরিন, ২৮ বছর বয়সে তৃতীয়বারের মতো গর্ভধারণ করেছেন। কারণ তাঁর আগের দুটি সন্তান গর্ভে নষ্ট হয়েছে। তাঁর ডায়াবেটিস ছিল না কখনো। কিন্তু এবার গর্ভকালের ২৮ সপ্তাহের দিকে খালি পেটে এবং গ্লুকোজ খেয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষার পর তাঁর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। চিকিৎসক সন্দেহ করছেন, আগের প্রেগন্যান্সিগুলোতে হয়তো তাঁর গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ছিল। কিন্তু যথাযথভাবে পরীক্ষা না করায় তা ধরা পড়েনি এবং সন্তান নষ্ট হয়েছে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
রক্তে শর্করা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে গর্ভাবস্থায় ধরা পড়লে সেটিই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। এ সময় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল থেকে কিছু হরমোন তৈরি হয়, যা এই রক্তে শর্করার স্তর বাড়িয়ে দেয়।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয় করতে খালি পেটে এবং ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার পর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে। একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করলে হবে না। একাধিকবার করতে হবে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা:
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে খাবারদাবার
এ সময় হবু মায়েদের খাবার হবে ডায়াবেটিসের রোগীদের মতো। চিনি ও মিষ্টি খাওয়া বাদ দিতে হবে। দুই বেলা রুটি, এক বেলা ভাত খেতে ভালো। তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি হালকা নাশতা খেতে হবে। নাশতা খেতে হবে বেলা ১১টায় একবার, বিকেল ৫টায় একবার এবং রাতে শোয়ার আগে একবার। নাশতা হিসেবে মুড়ি, মিষ্টি ছাড়া বিস্কুট, মিষ্টি কম থাকে এমন ফল, যেমন সবুজ আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি ইত্যাদি খেতে পারেন। আরও বিস্তারিত জানতে এবং সঠিক খাদ্যতালিকার জন্য পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
চিকিৎসা
গর্ভাবস্থায় মুখে খাওয়ার ওষুধগুলো শিশুর জন্য নিরাপদ নয়। ইনসুলিনই এ সময় সবার জন্য ভালো ও নিরাপদ। হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ইনসুলিন নেওয়া যেতে পারে। বাচ্চা প্রসব হয়ে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে না।
একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরেই আসে—সেটা হলো, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে কি স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করা যাবে? এর উত্তর হলো, ডায়াবেটিস স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে না। শিশু ও মায়ের অন্য সবকিছু ভালো থাকলে স্বাভাবিক প্রসব করা যাবে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে গর্ভের শিশুর কী কী ক্ষতি হতে পারে?
এর উত্তর হলো:
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে মায়েরও ক্ষতি হতে পারে বিভিন্ন ধরনের:
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে মায়ের রক্তে শর্করার মাত্রা যেমন থাকতে হবে:
ফলোআপ