মেডিকেল রাইটারঃ সাদিয়া ইসরাত স্মৃতি
মাইগ্রেন মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। মাইগ্রেন জেনেটিক কারণে হয়ে থাকলেও এর সঙ্গে আরও অনেক কারণ জড়িত থাকে। সাধারণত ১০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে মাইগ্রেনের ব্যথা দেখা যায়। এর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেশি।
- অতিরিক্ত কাজের চাপে তৈরি হওয়া মানসিক চাপ।
- নিয়মিত সঠিক সময়ে না ঘুমানো এবং না খাওয়া।
- হঠাৎ চা-কফি পান ছেড়ে দেওয়ায় ক্যাফেইনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হওয়া।
- মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া।
- রোদে দীর্ঘসময় ঘোরাঘুরি করা।
- অতিরিক্ত ঘুমানো।
- হরমোনের সমস্যা এবং দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন।
লক্ষণ
- মাথার এক পাশ বা দুই পাশজুড়ে, ঘাড়ে ও মাথার পেছনে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
- ব্যথা এক পাশে শুরু হয়ে অন্য পাশে ছড়াতে থাকে বা শুরুতে ধীরে, পরে দ্রুত বাড়তে থাকে।
- ক্লান্তি, বমি ভাব বা বমি হওয়া, চোখ বা চোখের চারপাশে ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা।
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
- কথা বলায় সমস্যা হওয়া এবং আলো সহ্য না হওয়া।
- ক্ষুধা কমে যাওয়া।
মাইগ্রেন ব্যথার সঙ্গে লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। কিছু খাবার মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আবার কিছু খাবার মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে
দেয়। তাই মাইগ্রেনের রোগীদের খাবারের ব্যাপারে বিশেষভাবে
সাবধান হতে হবে।
মাইগ্রেনে খাদ্য নির্দেশনা
যে খাবারগুলো মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে:
- ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত বা ব্রাউন রাইস, আলু সেদ্ধ, ওটস, বার্লি, সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি, মিষ্টি আলু, গাজর, পালংশাক, শুকনো ফল।
- বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে বেশি করে। পানি কম পানের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে।
- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-যুক্ত খাবার, ফলমূল, শাকসবজি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যেমন তিল, আটা, বিট ইত্যাদি।
- আদার টুকরো বা রস ব্যথা সারাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ১ থেকে ২টি খেজুর খাওয়া যাবে।
যা খাবেন না
- চা, কফি, কোমল পানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, মাখন, প্যাকেটজাত খাবার, বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার, দই, দুধ, টমেটো ও টকজাতীয় ফল।
- গমের আটা দিয়ে বানানো খাবার, যেমন পাউরুটি, পাস্তা, ব্রেড, ফাস্ট ফুড, রিচফুড, বেশি তেল-মসলা দেওয়া খাবার বা রেস্টুরেন্টের খাবার।
লেখক: ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ও পুষ্টিবিদ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল