বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থী পরিষদের আন্দোলন, অবরুদ্ধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন

চোখের স্ট্রোক থেকে হতে পারে চোখ অন্ধ

রেটিনা হলো চোখের সবচেয়ে পেছনের অংশ, যা ব্রেইনের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। আমরা যা কিছু দেখি, সবই রেটিনার মাধ্যমে। এতে ১.২ মিলিয়ন নার্ভ ফাইবার থাকে। এর মাধ্যমে আলোর প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়ে ব্রেইনের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে ঢোকে। ফলে আমরা দেখতে পারি। এ নার্ভ ফাইবারগুলো সক্রিয় রাখতে প্রয়োজন অক্সিজেন। অক্সিজেন আসে শিরা-উপশিরা হয়ে রক্তের মাধ্যমে।

ডায়াবেটিস, হাইপারটেনসন, কিডনি রোগ, রক্তশূন্যতা, ব্লাড ক্যানসারসহ নানা রোগে প্রথম আক্রান্ত হয় রেটিনা। এসব রোগে রেটিনার রক্তনালি ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। আঘাতেও চোখের রেটিনা ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

চোখের স্ট্রোকে যারা আক্রান্ত হয় :

ব্রেইন স্ট্রোকের মতো চোখেও স্ট্রোক করে। যাদের অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেসারের সঙ্গে ডায়াবেটিস আছে, তাদের চোখে রক্তক্ষরণ হতে পারে। চোখের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেটিনা। এতে অসংখ্য রক্তনালি থাকে। যাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তাদের রেটিনার রক্তনালির ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তখন রোগী বুঝতে পারেন হঠাৎ করে তার চোখের দৃষ্টি কমে গেছে।

প্রাথমিক করণীয় :

ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা বছরে দুবার রেটিনা পরীক্ষা করাবেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। হাইপারটেনশন, রক্তশূন্যতা, রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস, ক্যানসারসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের রেটিনা স্ক্রিনিং করাতে হবে। শিশুদের মধ্যে যারা হাই পাওয়ারের চশমা পড়ে, তাদেরও রেটিনা ছিঁড়তে পারে। সেক্ষেত্রেও রেটিনা ডাক্তার দিয়ে চোখ পরীক্ষা করিয়ে নেবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেক রোগী চোখে কিছু দেখতে পান না। সেক্ষেত্রে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে রেটিনা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পরলে চিকিৎসায় বেশিরভাগ রোগী ভালো হয়ে যায়। সঠিক সময়ে রেটিনায় লেজার অথবা ইঞ্জেকশন দিলে চোখ আগের মতো ভালো হয়ে যায়।

চিকিৎসা :

দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে রেটিনার চিকিৎসা না করালে বা চোখে ঝাপসা দেখা সত্ত্বেও রেটিনা ডাক্তারের স্মরণাপন্ন না হলে তখন লেজার কিংবা ইঞ্জেকশনে কোনো উপকার পাওয়া যায় না। বর্তমানে রেটিনা রোগের ডায়াগনোসিসের ক্ষেত্রে বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। সঠিক সময়ে চোখের এনজিওগ্রাম করে চিকিৎসা শুরু করে চোখের স্ট্রোক তথা অকাল অন্ধত্ব থেকে চোখ বাঁচানো সম্ভব। মস্তিস্কের সিটিস্ক্যানের মতোই চোখের রেটিনার স্ক্যান (ওসিটি) করে সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব রেটিনার কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে কিনা।

যারা দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনে ভুগছেন এবং রেটিনায় সমস্যা থাকা সত্ত্বেও অবহেলা করছেন, সেক্ষেত্রে লেজার বা ইঞ্জেকশন দিয়ে পরে আর কাজ হয় না। পরিণতি রেটিনা অপারেশন, যা ব্যয়বহুল। রেটিনা অপারেশনের আধুনিক প্রযুক্তি সব এখন বাংলাদেশেই আছে। উন্নত যন্ত্রপাতি দিয়ে ভিডিও ক্যামেরা চোখের ভেতরে স্থাপন করে ব্যথামুক্তভাবে নিয়মিত রেটিনা অপারেশন হচ্ছে। চোখ মহামূল্যবান সম্পদ। অবহেলা করা উচিত নয়। চিকিৎসা নিন। 

লেখক : ডা. এম আমিনুল ইসলাম নাফিজ, রেটিনা বিশেষজ্ঞ

সহকারি অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, আগারগাঁও, ঢাকা ।

চেম্বার : কনসালট্যান্ট, বাংলাদেশ আই কেয়ার হসপিটাল, জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড, ঢাকা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories