মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগে

ডুমুর ফল এর উপকারিতা

ডুমুর

ডুমুর (ইংরেজি: Ficus, Fig tree)

” বাড়ীর পাশে খালের ধারে একটা ডুমুর গাছ

গাছে ডালে ফলছে ডুমুর নিত্য বারমাস,

একটা সময় সারা দেশে ছিল প্রচুর গাছ,

আধুনিকতা আর নগরায়ন করছে সর্বনাশ।

ফাঁকে ফাঁকে দু-একটা গাছ যা ও টিকে আছে,

দু-হাত জুড়ে প্রাণ ভিক্ষা চাইছে মোদের কাছে।”

মোরাসিয়ে গোত্রভূক্ত ৮৫০টিরও অধিক কাঠজাতীয় গাছের প্রজাতিবিশেষ। এ প্রজাতির গাছ, গুল্ম, লতা ইত্যাদি সম্মিলিতভাবে ডুমুর গাছ বা ডুমুর নামে পরিচিত।

ফলের আবরণ ভাগ খুবই পাতলা এবং এর অভ্যন্তরে অনেক ছোট ছোট বীজ রয়েছে। এর ফল শুকনো ও পাকা অবস্থায় ভক্ষণ করা যায়। উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে এ প্রজাতির গাছ জন্মে। কখনো কখনো জ্যাম হিসেবে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়াও, স্ন্যাকজাতীয় খাবারেও ডুমুরের প্রয়োগ হয়ে থাকে।

অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা একটি ফলের নাম ডুমুর। ঝোপঝাড়ে যার দেখা প্রায়ই মেলে। ফল হিসেবে ডুমুরের প্রচলন যতো, তার থেকেও বেশি আধিপত্য তরকারিতে। ডুমুর ভর্তা খুব সুস্বাদু।

এই ফলে আছে অজানা অনেক পুষ্টিগুন। তবে সচারচার যে গুন আমরা জানি তাতেও তার কদরের কমতি নেই। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি, ভিটামিন এ, বি, শর্করা, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও আয়রন। ডুমুরের রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ

ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়মিত ফল ও সবজি খাওয়ার অভ্যাস না থাকলেও আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়ে থাকি। ডায়েটে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে হাইপারটেনশনের সমস্যা হতে পারে। তাই ডায়েটে রাখুন ডুমুর ফল। এর পটাশিয়াম হাইপারটেনশন প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ

খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ ডুমুর ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আপনার খাদ্যতালিকায় ডুমুর রাখুন। ডুমুর বিদ্যমান পেকটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ

সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, মেনোপজ পরবর্তী পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে ডুমুর সাহায্য করে। আঁশ সমৃদ্ধ ডুমুর খাদ্যতালিকায় রাখার ফলে ৩৪% মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম দেখা দিয়েছে।

ডায়াবেটিসের সমস্যায় উপকারীঃ

ডায়াবেটিসে ডুমুর যেমন উপকারী, তেমনি ডুমুরের পাতাও উপকারী। ডায়াবেটিসে অনেক সময় রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয়। গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, নিয়মিত ডুমুর খেলে ইনসুলিন গ্রহণের পরিমাণ কম করতে সাহায্য করে।

হাড় বৃদ্ধিতে সহায়কঃ

ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। অতিরিক্ত হাই-সল্ট ডায়েট মেনে চললে ইউরিনের মধ্য দিয়ে অনেক ক্যালসিয়াম বেরিয়ে যায়। এই ক্যালসিয়াম লস প্রতিরোধ করতে ডুমুরের পটাশিয়াম সাহায্য করে। এভাবে ডুমুর হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়া ডুমুর হাড়ের ক্ষয়রোগও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

হার্ট ভালো রাখেঃ

গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, ডুমুর ও ডুমুরের পাতা ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে হার্ট ভালো থাকে। এছাড়া ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাংগানিজ। যা বয়েসজনিত কারণের নানা অসুখ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই খাদ্যতালিকায় রাখুন ডুমুর।

পেটের সমস্যা দূর করেঃ

ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ। ফলে পেটের সমস্যার জন্য ডুমুর খুব ভালো কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যাও কমাতে সাহায্য করে।

কবিরাজ বলেন

ডুমুর আমাশায় উপকারি

স্কার্ভি হলে ডুমুর খেলে উপশম হয়

জ্বর হলে ডুমুর ও থানকুনি পাতার ঝোল খেতে বলেন কবিরাজ দুর্বলতা কাটানোর জন্য।

কাচা ডুমুর চাক করে কেটে পানিতে কিছুক্ষন ভিজিয়ে সে পানি খেলে হিক্কা উঠা বন্ধ হবে।

প্রকারভেদ:

ডুমুর কয়েক প্রজাতির হয়। বাংলাদেশে সচরাচর যে ডুমুর পাওয়া যায় (Ficus hispida) তার ফল ছোট এবং খাওয়ার অনুপযুক্ত। এর আরেক নাম ‘কাকডুমুর’। এই গাছ অযত্নে-অবহেলায় এখানে সেখানে ব্যাপক সংখ্যায় গজিয়ে ওঠে। গাছ তুলনামূলকভাবে ছোট। এটি এশিয়ার অনেক অঞ্চলে এবং অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়। পাখিরাই প্রধানতঃ এই ডুমুর খেয়ে থাকে এবং পাখির বিষ্ঠার মাধ্যমে বীজের বিস্তার হয়ে থাকে। অনেক এলাকায় এই ডুমুর দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়া হয়। এই ডুমুরের পাতা শিরিশ কাগজের মত খসখসে।গ্রামে বধুরা শিং, মাগুর সহ অন্যান্য মাছ পরিস্কার করে এই ধারালো পাতা দিয়ে। এর ফল কান্ডের গায়ে থোকায় থোকায় জন্মে।

মধ্যপ্রাচ্যে যে ডুমুর (আঞ্জির) পাওয়া যায় (Ficus carica) তার ফল বড় আকারের; এটি জনপ্রিয় ফল হিসেবে খাওয়া হয়। বানিজ্যিকভাবে এর চাষ হয়ে থাকে আফগানিস্তান থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত। এর আরবি নাম ‘তীন’; হিন্দি, উর্দু, ফারসি ও মারাঠি ভাষায় একে ‘আঞ্জির’ বলা হয়। এই গাছ ৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এর আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্য।

একটি ডুমুর গাছ মানুষের তরকারি খাবার চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি অসংখ্য দেশীয় প্রজাতির পাখীর খাবার যোগায়। তাই আসুন আমরা সবাই অন্যান্য বৃক্ষ রোপনের পাশাপাশি একটি করে হলেও বাড়ির আঙ্গিনায় ডুমুর গাছের চারা রোপন করি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories