রাতে ওষুধের দোকান বন্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিজ্ঞপ্তিকে গণবিরোধী বলছেন নগরবাসী। তারা বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়বে গুরুতর অসুস্থ অনেক রোগী । কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ।
তীব্র পেটের ব্যাথায় আক্রান্ত ভায়রা-ভাইকে নিয়ে শরীয়তপুর থেকে ঢাকা মেডিকেলে এসেছেন জাভেদ সাহেব। রাত ৩টায় জরুরি ওষুধের খোঁজে গেটের বাইরে তিনি।
অসুস্থ মা’কে নিয়ে একই দশা রাজধানীর দনিয়া এলাকার মনির হোসেনের। বারডেম হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে পারলেও ওষুধ কিনতে পারেননি। অগত্যা, ঢাকা মেডিকেলের সামনেই খোঁজাখুঁজি ।
ওষুধ কিনতে আসা এক ক্রেতা বললেন, রাত ২টায় যদি ওষুধের দোকান বন্ধ করে দেয় তাহলে আমি ওষুধ কই পাবো? আমার অসুস্থ আম্মুকে নিয়ে কই যাবো? ফার্মেসি অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হবে। রাতে জরুরি ওষুধ দরকার হলো কিন্তু দেখা গেলো যে ফার্মেসি বন্ধ, তখন তো মরণ ছাড়া উপায় নাই ।
সম্প্রতি ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনের গণবিজ্ঞপ্তিতে সব ধরনের ওষুধের দোকান রাত ২টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, রাতভর দোকান চালু রাখতে গেলে নিতে হবে বিশেষ অনুমতি। এরইমধ্যে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের বাইরের এমন অনুমতি পেয়েছে মাত্র তিনটি দোকান ।
একজন ওষুধ বিক্রেতা বললেন, ঢাকা মেডিকেলের তো নিজস্ব ওষুধের দোকান নেই, তাহলে পেশেন্টরা ওষুধ কিনবে কোথা থেকে? যেকোনো সময় যে কারো যে কোনো ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে, তখনও তারা কই যাবে?
রাতে ওষুধের দোকান বন্ধের সিদ্ধান্তের তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে নগরবাসী। তারা বলছেন এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বাড়বে মৃত্যুঝুঁকি । এছারাও চিকিথসক সংগঠন গুলোতে তাঁদের মধ্যে ব্যপক অসন্তোষ পরিলক্ষিত হচ্ছে । তাঁদের মতে, এরূপ সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক ও গণবিরোধী বর্তমান সরকার থেকে আসা করেন নি ।
ঢাকা মেডিকেলে আসা এক রোগীর স্বজন বললেন, আমি ধানমণ্ডিতে থাকি। কিছু ওষুধ আছে যেগুলো ওদিকের ফার্মেসিগুলোতে পাওয়া যায় না। সেজন্য আমার এখানে আসতে হয়েছে। মানুষের বিপদআপদ তো আর দিন রাত দেখে আসে না, গভীর রাতে আপনার বাসার কোনো মুরুব্বি যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন আর জরুরি ওষুধের প্রয়োজন যদি হয়, তখন এসে দেখলেন যে সব দোকান বন্ধ তখন কী করবেন ?
১ সেপ্টেম্বর থেকে রাত ২টার মধ্যে ওষুধের দোকান বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন সবাই ।