মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগে

ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা

ডিমের গুণগতমান সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে শুক্রবার ২০তম বিশ্ব ডিম দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্রতিদিন একটি ডিম, পুষ্টিময় সারাদিন’।

ডিমকে বলা হয়ে থাকে পরিপূর্ণ খাদ্য। সারা পৃথিবীতে মাত্র কয়েকটি খাদ্যকে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়- যার মধ্যে ডিম অন্যতম। বিগত ১২ বছরে বাংলাদেশে ডিমের উৎপাদন ৩০৭ শতাংশেরও অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অব্যাহত উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে ডিমের বাৎসরিক প্রাপ্যতা বেড়ে হয়েছে মাথাপিছু ১৩৬টি।

ডিম কি !

বিভিন্ন প্রজাতির প্রানীদের স্ত্রী জাতির পাড়া একটি ডিম্বাকার জিনিস যেটা মেমব্রেন স্তর দিয়ে ঘিরে থাকা ডিম্বক এবং বহিরাবরণের সমন্বয়ে গঠিত। বহিরাবরণের প্রধান কাজ হচ্ছে এর অভ্যন্তরে বৃদ্ধি পাওয়া ভ্রূণ এবং ভ্রূণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি রক্ষা করা।

ডিমের প্রায় সকল অংশ খাবারের জন্য উপযোগী। শুধু মাত্র খোসা বাদ দেয়া হয়। ডিম খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। আমাদের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। ডিম পুষ্টিকর খাবার হলেও অতিরিক্ত ডিম খাওয়া মোটেও ভালো নই। তাই আমাদের উচিত ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা।

ডিমের পুষ্টি উপাদান
সম্পূর্ণ সিদ্ধ করা ডিমের প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ১৫৫ ক্যালোরি, ১.২ gram শর্করা, ১০.৬ gram স্নেহ ১২.৬ gram প্রোটিন, ০.০৬৬ mg থায়ামিন (বি১) এবং রিবোফ্লাভিন (বি২) ০.৫ mg. এছাড়াও আরও রয়েছে ৫০ mg ক্যালসিয়াম, ১.২ mg লোহা, ১০ mg ম্যাগনেসিয়াম, ১৭২ mg ফসফরাস, ১২৬. mg পটাশিয়াম, ১.০ mg দস্তাসহ অন্যান পদার্থ।

কেন প্রতিদিন আমাদের ডিম খাওয়া উচিত
প্রায় সব রকমের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক খাবার ডিম। ডিমকে প্রোটিন ও পুষ্টি উপাদানের শক্তি ঘর বলা হয়। সব বয়সের মানুষের জন্য ডিম অত্যন্ত উপকারী খাদ্য। তাই ‘আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান, প্রতিদিন একটি করে ডিম খান।

ডিম আমাদের খুব পরিচিত একটি পুষ্টিকর খাবার। ডিমের পরিপূর্ণ উপকার পাওয়ার জন্য আমাদের নিয়ম মেনে ডিম খাওয়া দরকার। ডিম আমাদের দেহে প্রচুর ক্যালোরি দেয়। সকালে একটি ডিম আপনাকে সারা দিন কাজ করতে সাহায্য করবে। নিয়মিত সকালে ডিম খেলে মাসে প্রায় ৩ পাউন্ড ওজন কমানো সম্ভব।

ডিমের উপকারিতা

ডিম প্রোটিনের উৎস
আমাদের দেহের একটি অতি প্রয়োজনিয় উপাদান হলো প্রোটিন। আর প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস হলো ডিম। ডিমে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন পাওয়া যায়। ডিমে থাকা প্রোটিন আমাদের দেহের হাড়কে শক্ত এবং মজবুত করে। ডিমে থাকা প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁত ভালো রাখে।

দেহে শক্তি যোগান দেয়-
আমাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম করার জন জন্য শক্তি দরকার। সকালের একটি মাত্র ডিম আপনাকে সারা দিন শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে। ডিমে থাকা ভিটামিন-বি আমাদের গ্রহনকৃত খাবারকে এনার্জিতে পরিনত করে।

চোখের সমস্যা সমাধান করে-
আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো আমাদের চোখ। চোখ ভালো রাখতে ভিটামিন-এ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আর ডিমে রয়েছে ভিটামিন-এ। ডিমে থাকা কেরোটিনয়েড ও ল্যুটেন বৃদ্ধ বয়সে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে-
ক্যানসার একটি মারাত্মক ব্যাধি। ডিমে থাকা ভিটামিন-ই আমাদের ত্বক এবং কোষের ফ্রি র‍্যাডিকেল ধংস করে। এবং ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও নতুন কোষ গঠন করতে সাহায্য করে। অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে নিয়মিত ডিম খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

পেশি ব্যাথা কমায়
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারনে আমাদের হাত পায়ের পেশিতে ব্যাথা হয়। ডিম খেলে পেশির ব্যাথা কমে। তাই ডাক্তাররা ব্যায়াম করার পরে ডিম খাওয়ার কথা বলেন।

হার্ট ভালো রাখে-
আমাদের হার্ট ভালো রাখা অতি জরুরি। ডিম হার্টের মধ্যে রক্ত জমাট বাধতে বাধা প্রদান করে। এবং সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে
আমাদের দেহে দুই ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায়। খারাপ কোলেস্টেরল এবং ভালো কোলেস্টেরল। ডিম খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে।

ডিম কোলাইনে উৎস
আমাদের সার্বিক সুস্থতায় কোলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। দেহে কোলাইনের ঘাটতি হলে লিভারের সমস্যা হয়। ডিমে প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রাম কোলাইন থাকে। তাই ডিম লিভার, স্নায়ু, এবং যকৃত ভালো রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিমের ভুমিকা রয়েছে। ডিমে থাকা জিংক আমাদের দেহে কমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। সর্দি, কাশি, জ্বরসহ বিভিন্ন রকমের রোগ প্রতিরোধ করতে ডিম খাওয়া দরকার।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
ডিম ওজন নিয়ন্ত্রণের খাবার হিসাবেও কাজ করে। অনেক সময় খিদে বেশি থাকার কারনে আমরা বেশি খেয়ে ফেলি।প্রধানত, বেশি খাওয়ার কারনেই ওজন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ডিম আমাদের খিদে কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তাই ডিম খেতে পারেন ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য।

ডিমের অপকারিতা
অতিরিক্ত ডিম খাওয়া মোটেও ভালো নয়। প্রতিদিন একটি বা একদিন পর পর একটি করে ডিম খাওয়া ভালো। অতিরিক্ত ডিম খেলে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। খারাপ কোলেস্টেরল হৃদরোগের কারন। ডিম পরিমিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনি স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।

ডিম খুব ভালো একটি পুষ্টিকর খাবার। সবার উচিত স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ডিম খাওয়া। ডিমের মধ্যে শরীরের উপযোগী প্রায় সব ধরনের উপাদান রয়েছে। মেয়েদের পিরিয়ডের সময় ডিম খাওয়া ভালো। কারন, অতিরিক্ত রক্ত যাওয়ার ফলে মেয়েদের অ্যানিমিয়া হয়। আর ডিমে থাকা আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ডিম খান কিন্তু অতিরিক্ত ডিম খাবেন না। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories