প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন হৃদরোগের চিকিৎসায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই রোগের চিকিৎসার জন্য এখন আর দেশের বাইরে যেতে হয় না। শতকরা ৯৫ ভাগ চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে। জটিল অসুখের চিকিৎসা এখন দেশেই সম্ভব।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কার্ডিওভাস্কুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন এবং ইন্টারভেনশনাল একাডেমির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ৩য় আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সাশ্রয়ী করেছে এবং এটিকে প্রতিটি দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি হৃদরোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশকে প্রায় স্বনির্ভর করে তুলেছে।
এসময় সরকার প্রধান আরও বলেন, প্রতি হাজারে ১০ জন শিশু হৃদরোগে ভুগছে। দেশে মোট মৃত্যুর ২৭ ভাগ মৃত্যু হৃদরোগে হয়ে থাকে। এরজন্য দায়ী হলো আমাদের খাদ্যাভ্যাসের ঠিক না থাকা, ধূমপান করা ও কায়িকশ্রম না করা। আমাদেরকে শুধু হৃদরোগ চিকিৎসা নয়, আমাদেরকে প্রতিরোধেও নজর দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সারাদেশে ৬০০টি হাসপাতাল, হৃদরোগ, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ১১টি স্নাতকোত্তর ‘সুপার বিশেষায়িত হাসপাতাল’, কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতাল, নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল এবং অন্যান্য হাসপাতাল স্থাপনের পাশাপাশি সারাদেশে ছয়শ’র বেশি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গ্রামের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা ১৮ হাজার পাঁচশ’ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি। হাসপাতাল থেকে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, সারাদেশে ৪৩টি হাসপাতালে টেলি-মেডিসিন সেবা চালু করা হয়েছে, যেখানে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিক রয়েছে।
এছাড়া পাঁচ লাখ অটিস্টিক শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ১০৩টি সেবা কেন্দ্র রয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কার্ডিওভাস্কুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান।