গ্যাসের সমস্যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে একটি সাধারণ সমস্যা। হঠাৎ পেট ফুলে যাওয়া, অস্বস্তি বা পেটে ব্যথা—এসবই গ্যাসের লক্ষণ। বেশিরভাগ মানুষ এটি একবার না একবার অনুভব করে থাকেন, তবে কিছু মানুষের জন্য এটি নিয়মিত সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
গ্যাসের সমস্যা আমাদের অনেকের দৈনন্দিন জীবনের একটি সাধারণ বিষয়। হঠাৎ পেট ফুলে যাওয়া, অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করা গ্যাসের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে পড়ে। অনেকের জন্য এটি সাময়িক হলেও, কেউ কেউ প্রায়ই এই সমস্যায় ভোগেন। আমিও একসময় এই সমস্যায় ভুগেছি, তাই আজ আপনাদের সাথে গ্যাসের কারণ, প্রতিকার এবং ঘরোয়া সমাধান নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছি।
আমরা অনেকেই বারবার বাইরের ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড খাই, যা হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং পেটে গ্যাস জমতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত মশলাদার খাবারও গ্যাসের অন্যতম কারণ।
সময়মতো খাবার না খাওয়া, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা কিংবা হঠাৎ বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ার কারণে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা গ্যাসের সমস্যার সৃষ্টি করে।
পানি কম পান করলে খাবার ভালোভাবে হজম হয় না, এতে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে।
খুব তাড়াতাড়ি খাওয়ার ফলে প্রচুর বাতাস পাকস্থলীতে প্রবেশ করে, যা গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
কিছু খাবার, যেমন বাঁধাকপি, ডাল, মটরশুটি, কোমল পানীয় ও অতিরিক্ত দুগ্ধজাত খাবার গ্যাসের সমস্যা বাড়াতে পারে।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, নিচের কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করলে গ্যাসের সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব—
সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং গ্যাসের সমস্যা কমে যায়।
এক কাপ গরম পানিতে এক চামচ আদার রস মিশিয়ে পান করলে গ্যাস দ্রুত কমে যায় এবং হজমশক্তি বাড়ে।
এক চা-চামচ জিরা ভেজানো পানি পান করলে হজম ভালো হয় এবং গ্যাসের সমস্যা দ্রুত কমে যায়।
রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে পান করলে হজম সমস্যা দূর হয় এবং গ্যাস কমে।
লেবুর রস ও সামান্য বিট লবণ মিশিয়ে পান করলে এটি হজমে সহায়তা করে ও গ্যাস কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
✔ প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খান: দই, ছাছ ও ফার্মেন্টেড খাবার গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
✔ খাওয়ার পরপরই শুয়ে না পড়ুন: খাবারের পর অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন।
✔ অতিরিক্ত মানসিক চাপ এড়ান: স্ট্রেস বা টেনশন গ্যাসের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়, তাই ধ্যান (মেডিটেশন) ও ইয়োগা করতে পারেন।
✔ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স পরীক্ষা করুন: দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পর যদি গ্যাস হয়, তাহলে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকতে পারে, তাই এটি এড়িয়ে চলুন।
হালকা খাবার, যেমন ভাত, ডাল, জিরা পানি ও দই খেলে গ্যাসের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
বাঁধাকপি, মটরশুটি, অতিরিক্ত ঝাল-মশলা, চা-কফি ও কোমল পানীয় গ্যাস বাড়াতে পারে।
গরম পানি পান করা, হালকা হাঁটাহাঁটি করা এবং আদা-পানি পান করা।
হ্যাঁ, নিয়মিত পানি পান, সঠিক খাবার গ্রহণ ও ঘরোয়া প্রতিকার অনুসরণ করলে গ্যাসের সমস্যা কমে আসতে পারে।
যদি প্রতিদিন গ্যাসের সমস্যা হয় এবং তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।