বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থী পরিষদের আন্দোলন, অবরুদ্ধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন

নিরাপদ উপায়ে খৎনা বা মুসলমানি বা সারকামসিশন

মুসলিম সমাজে মুসলমানি বা খতনা একজন পুরুষের জীবন ঘনিষ্ট স্বভাব কর্ম । পুরুষাঙ্গের সামনের বা মাথার দিকে যে অতিরিক্ত চামড়া পুরুষাঙ্গের সংবেদনশীল মাথাকে ঢেকে রাখে তা কেটে বাদ দেওয়াকেই বলা হয় খতনা বা মুসলমানি বা সারকামসিশন।

প্রয়োজনীয়তাঃ যৌনাঙ্গের নানা রোগ থেকে বেঁচে থাকার জন্য মুসলমানি দেওয়া খুবই প্রয়োজন। ধর্মীয় কারণে মুসলিম ও খৃস্টানরা খৎনা করিয়ে থাকে। তাছাড়া ফাইমোসিস বা প্যারাফাইমোসিস রোগ হলেও চিকিৎসকগণ খৎনা করানোর পরামর্শ দিতে থাকেন ।

ফাইমোসিসঃ পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া যদি মূত্র নালীকে এমনভাবে ঢেকে রাখে যাতে প্রস্রাব ভালো মতো বের হতে পারে না। ফলে শিশুরা বা পুরুষটি জ্বালা যন্ত্রণায় ভোগ করতে হতো । এতে পুরুষাঙ্গের মাথা ফুলে যায়। এভাবে বেশিদিন চললে প্রস্রাবের নালীতে ইনফেকশন দেখা দেয়। এবং বৃক্ক বা কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থা কে বলে ফাইমোসিস। এই অবস্থা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতে অবশ্যই খতনা দিতে হবে।

প্যারাফাইমোসিসঃ পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া উল্টে শক্ত হয়ে গেলে এই চামড়াকে আর সামনে ও পেছনের দিকে নড়াচড়া করা যায় না। ফলে লিঙ্গের মাথা ফুলে যায়। জ্বালাযন্ত্রণা করে। রক্ত সঞ্চালনে বিরাট অসুবিধা হয়। এই অবস্থাকে বলা হয় প্যারাফাইমোসিস। এ অবস্থায় মুসলমানি দেওয়া খুবই দরকার হয়। তাছাড়া পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য যেকোনো ধর্মের পুরুষরা মুসলমানি দিতে পারেন।

খতনার উপকারিতাঃ

পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নিচে এক ধরনের সাদা সাদা পদার্থ যাকে স্মেগমা বলা হয় তা জমে লিঙ্গের মাথা অপরিস্কার ও দুর্গন্ধময় করে তোলে। এই স্মেগমাই পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার রোগ সৃষ্টি করে। তাই মরণ ব্যাধি এ রোগ থেকে বাঁচতে মুসলমানি দেওয়া দরকার। তাই মুসলিম ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার নেই বললেই চলে। এর প্রধান কারণ খতনা বা মুসলমানি। অনেক দেশী-বিদেশী চিকিৎসকের জরিপের মাধ্যমে তারই সত্যতা প্রকাশ পেয়েছে। মুসলমানি করালে লিঙ্গের মাথায় বিভিন্ন রকমের ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া জাতীয় রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

মুসলমানির প্রধান সুবিধা হলো এর ফলে লিঙ্গের মাথায় তরল রস জমে নোংরা অবস্থার সৃষ্টি হওয়া থেকে লিঙ্গ রক্ষা পায় ফলে বিভিন্ন প্রকার রোগও বাসা বাধতে পারে না। এছাড়াও মুত্রনালীর প্রদাহ শিশুদের বেশি হয় । এতে কিডনির সমস্যা, জ্বর ও রক্তের ইনফেকশন পর্যন্ত হতে পারে। মুসলমানি করিয়ে ফেল্লে এসবের ঝুঁকি কমে যায়। বিভিন্ন তথ্য মাধ্যম থেকে জানা যায় মরণ ব্যাধি এইডস এবং যৌন রোগ প্রতিরোধে মুসলমানি বিরাট একটি ভুমিকা পালন করে। তাই আমরা সবাই সতর্ক হয়ে আমাদের ছেলে শিশুদের ছোট বয়সেই মুসলমানি করানো দরকার।

কখন খতনা করা যাবে নাঃ পুরুষাঙ্গের জন্মগত ত্রুটির কারণে বাচ্চা জন্মের পর লিঙ্গ দেখলে বুঝা যায় যে খতনা হয়ে জন্ম হয়েছে। এ অবস্থায় খতনা বা মুসলমানি দেওয়ার দরকার হয় না। আবার কারও কারও প্রস্রাব নির্গত হবার ছিদ্র যথাস্থানে না থাকলেও খতনা বন্ধ রেখে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। খতনা করে ফেললে ছিদ্রটা যথাস্থানে ফিরিয়ে আনা অনেক কঠিন হয়ে যায়।

খতনা দেওয়ার আগে রক্ত পরীক্ষাঃ আমাদের গ্রামে প্রায়ই হাজাম দ্বারা মুসলমানি বা খতনা করানো হয়। এটি একটি পুরাতন রীতি। চিকিৎসা বিজ্ঞানে তখনকার দিনে তত উন্নত ছিল না। ফলে হাজামরাই মুসলমানির কাজ সমাধা করতেন। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নতির পরে দেখা যাচ্ছে এতে শিশুদের নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বা হচ্ছে। মুসলমানি দেওয়ার পরে কোন কোন শিশুর বা খতনাকারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। যা মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে বা মৃত্যুও ডেকে আনে। তাই মুলমানি দেওয়ার আগে জন্মগত রক্তক্ষরণ সমস্যা আছে কিনা তা জানা খুবই প্রয়োজন। এসময় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কী সমস্যা হতে পারেঃ

  • চামড়া কাটার পর রক্ত ক্ষরণ বন্ধ হয় না।
  • হাজাম বা অনভিজ্ঞতার কারণে অতিরিক্ত বা কম চামড়া কেটে ফেলা।
  • লিঙ্গের সংবেদনশীল মাথা কেটে ফেলা।

তাই অভিজ্ঞ সার্জন ডাক্তারদের নিকট মুসলমানি বা খতনা করানো উচিত।

খৎনা কোথায় করানো যায়

বাংলাদেশে একসময় মুসলিম রীতি মোতাবেক খৎনা করানো হল তখন, খৎনা করে দিতেন ‘হাজাম’ নামে পরিচিত একজাতীয় লোকজন, যারা সনাতনি কায়দায়, কোন রকম স্বাস্থ্যকর জ্ঞান ছাড়াই খুর বা ব্লেড দিয়ে, পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে খাত্নার কাজ সম্পাদন করতেন যার যার নির্ধারিত ফি এর বিনিময়। এত অনেকের খৎনা পরবর্তী ইনফেকশন দেখা দিত ।

কিন্তু বর্তমান যুগে সহজেই যে কোন সরকারী হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ অথবা ইউরোলজি বিভাগে খৎনা করানোর ব্যবস্তা আছে । এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে খৎনা প্যাকেজ প্রচলন রয়েছে । যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী খৎনার কাজটি সম্পাদন করে থাকেন ।

হাসপাতালে আধুনিক এবং উন্নত ব্যথাহীন লেজার খৎনা সার্জারি করা হয়। লেজার খতনা ব্যথাহীন একটি অস্ত্রোপচার যার সাফল্যের হার 100% বেশি এবং লেজারের খতনার সময় বা পরে জটিলতার সম্ভাবনা শূন্য। আপনি যদি ফিমোসিস, প্যারাফিমোসিস, ব্যালানাইটিস, ব্যালানোপোস্টাইটিস বা অন্য কোনো ত্বকের সমস্যায় ব্যথাহীন লেজার খৎনা সার্জারি উত্তম।

মুসলমানির জন্য সঠিক সময় কখন-
মুসলমানির জন্য সঠিক সময় হলো স্কুলে যাওয়ার আগে। তিন থেকে চার বছরের মধ্যে। যখন সে ডায়াপার ছেড়ে দেবে। তখনই করিয়ে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। আর পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের একটি দল একমত হয়েছেন, এই সময়ের আগে করলে প্রস্রাবের রাস্তা সরু হয়ে যেতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories