মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগে

কাটা-ছেঁড়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা

ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হওয়াকে কেটে যাওয়া বা কাট ইনজুরি বলে। আবার ভোঁতা কোনো জিনিস দিয়ে বা পড়ে গিয়ে আঘাত পেলে সাধারণত ত্বক কেটে যায় না, বরং ছিলে যায়, থেঁতলে যায় বা ছিঁড়ে যায়—যাকে বলা হয় লেসারেসন হওয়া। ছোটখাটো কাটা-ছেঁড়া নিত্যদিনের ব্যাপার। রক্তপাত বেশি না হলে বা সংক্রমণ না হলে বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে তা সামাল দেওয়া যায়। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেলেই হাসপাতালে নেওয়া উচিত।

অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা-

  • কেটে-ছিঁড়ে গেলে রক্তপাত হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলে বুঝতে হবে যে রক্তনালি কেটে গেছে, এটি সহজে বন্ধ নাও হতে পারে। আবার রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা থাকলে, যেমন: যকৃতের রোগ, হিমোফিলিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদি কিংবা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসপিরিন খাচ্ছেন, এমন রোগীর রক্তপাত সহজে বন্ধ নাও হতে পারে।
  • ছোটখাটো কাটা-ছেঁড়ায় কেবল ত্বক ও ত্বকের নিচের কিছু কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু গভীর ক্ষতের ক্ষেত্রে চর্বি, মাংস, এমনকি হাড়ের কাছ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে সেলাই লাগতে পারে।
  • কোনো রোগী কাটা-ছেঁড়ার পর হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারেন। সাধারণত রক্ত দেখে বা ব্যথায় বা ভয়ে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা হলে এমনটি হয়।
  • অতিরিক্ত ও অব্যাহত রক্তক্ষরণের ফলে নাড়ির স্পন্দন মৃদু ও ক্ষীণ হয়ে আসতে পারে, রক্তচাপ কমে যেতে পারে, হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসতে পারে। এর মানে রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে আসছে, তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত।

কী করা উচিত?

হঠাৎ কেটে গেলে বিচলিত না হয়ে কাটা জায়গা উঁচুতে ধরে রাখুন ও এক টুকরা পরিষ্কার কাপড় বা গজ দিয়ে জোরে চেপে ধরুন। ছোটখাটো কাটা হলে কিছুক্ষণ পর এমনিতেই রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে।
কাটা জায়গাটা পরিষ্কার পানি, সাবানপানি বা অ্যান্টিসেপটিক মিশ্রিত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সংক্রমণ রোধে এক টুকরা পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত গজ দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগিয়ে জায়গাটা ঢেকে বা বেঁধে রাখতে পারেন।
দশ বছরের মধ্যে টিটেনাস টিকা না দেওয়া থাকলে পরিষ্কার ক্ষতেও একটা বুস্টার ডোজ নেওয়া ভালো। কিন্তু ক্ষতস্থান নোংরা বা পুরোনো মরচে ধরা অপরিষ্কার কিছু দিয়ে কেটে গেলে পাঁচ বছরের মধ্যে টিটেনাস না দেওয়া থাকলে অবশ্যই বুস্টার নিয়ে নিন।
ব্যথা বেড়ে গেলে, ফুলে লাল হলে বা পুঁজ জমলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে শর্করা ঠিক আছে কি না দেখুন।

কাটা-ছেঁড়ার প্রাথমিক চিকিৎসা
কাটা-ছেঁড়ার প্রাথমিক চিকিৎসায় নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—

১. রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করুন

  • যেকোনো কাটা-ছেঁড়ায় প্রথমেই ক্ষত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে।
  • প্রথমে হাত সাবান-পানি অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে ভালোমতো পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এতে হাত থেকে ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রামণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। সম্ভব হলে গ্লাভস পরে নিন।
  • ক্ষতস্থানের ওপরে কোনো কাপড় থাকলে সেটি সরিয়ে নিন। তবে কাপড় যদি ক্ষতস্থানের সাথে আটকে যায় অথবা ক্ষতের অনেক ভেতরে ঢুকে যায় তাহলে সেটি টানাটানি করে সরানোর চেষ্টা করবেন না।
  • এবার পরিষ্কার ও শুকনো এক খণ্ড মোটা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থানটি কয়েক মিনিট ভালোমতো চেপে ধরে রাখতে হবে। যতক্ষণ রক্তক্ষরণ বন্ধ না হয়, ততক্ষণ এভাবে চেপে ধরে রাখতে হবে। রক্তক্ষরণ বন্ধে এমন কাপড় বেছে নেওয়া উচিত যার শোষণক্ষমতা ভালো। যেমন: গজ ব্যান্ডেজ, মোটা রুমাল ও তোয়ালে। এক্ষেত্রে তুলা জাতীয় কিছু ব্যবহার করা উচিত নয়। তুলায় থাকা আঁশ ক্ষতস্থানে আটকে যেতে পারে।
  • উল্লেখ্য, ক্ষততে কোনো বস্তু আটকে থাকলে তা বের না করে, ক্ষততে সরাসরি চাপ দেওয়া যাবে না। চোখের ক্ষতেও সরাসরি চাপ দিবেন না।
  • আক্রান্ত অংশ যতটা সম্ভব কম নড়াচড়া করতে হবে। সম্ভব হলে রোগীকে শুইয়ে দিতে হবে।
  • হাতের কোথাও কাটলে ক্ষতের অংশটি উঁচু করে তুলে ধরতে হবে (মাথা থেকে উঁচুতে)। পায়ের কোথাও কাটলে পা উঁচুতে তুলে ধরতে হবে (হৃৎপিণ্ড থেকে উঁচুতে)। এতে আক্রান্ত অংশে রক্তসঞ্চালন কমবে এবং রক্তপাত কমে আসবে।

২. ক্ষতস্থান পরিষ্কার করুন

  • ক্ষত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হলে কেটে যাওয়া অংশটুকু পরিষ্কার করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—
  • প্রথমে নিজের অথবা যে ড্রেসিং করবে তার হাত ভালোভাবে সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
    কাটা-ছেঁড়ার অংশটি বিশুদ্ধ পানিতে ৫–১০ মিনিট ধরে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
    সাবান-পানি দিয়ে ক্ষতের আশেপাশের অংশটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। তবে ক্ষতস্থানের ভেতরে যেন সাবান না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া কোনো অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।
    ধারালো ও চোখা জিনিস ঢুকে গিয়ে কেটে গেলে ক্ষতস্থানের ভেতরে কিছু ঢুকে আছে কি না সেটি ভালোভাবে লক্ষ করতে হবে। যদি এমন কিছু পাওয়া যায় তাহলে তা বের না করে দ্রুত হাসপাতালে অথবা ডাক্তারের কাছে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।
  • কাটা-ছেঁড়ার ভেতরে কিছু দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু যেই জিনিস দিয়ে কেটে-ছিঁড়ে গেছে তার সবগুলো খুঁজে পাওয়া না গেলেও ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি।
  • কোনোভাবেই ক্ষতস্থানে কোনো ধরনের খোঁচাখুঁচি করবেন না।

৩. ক্ষতস্থানে ড্রেসিং

  • ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার পর ড্রেসিং করে ক্ষতস্থান মুড়ে দিলে তা ধুলাবালি ও রোগজীবাণু থেকে ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
  • ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতো করে চেপে চেপে শুকিয়ে নিতে হবে।
  • এরপর ‘অ্যাডহেসিভ ব্যান্ডেজ’, অর্থাৎ ক্ষতস্থানকে পুরোপুরি ঢেকে দিয়ে তার চারিদিকে আপনা-আপনি লেগে থাকে—এমন ব্যান্ডেজ লাগাতে হবে। এগুলো ফার্মেসিতে সার্জিন প্যাড ও সার্জিন পোর-সহ বিভিন্ন নামে কিনতে পাওয়া যায়।
  • এই ধরনের ব্যান্ডেজ হাতের কাছে পাওয়া না গেলে জীবাণুমুক্ত (স্টেরাইল) গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষতটি ব্যান্ডেজ করে নিতে হবে।
  • উভয় ধরনের ব্যান্ডেজ এর আকারই ক্ষতের আকারের চেয়ে সামান্য বড় হতে হবে।
  • ব্যান্ডেজ এর যেই অংশটি ক্ষতের ঠিক ওপরে বসানো হবে তাতে যেন কোনোভাবেই হাতের স্পর্শ না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
  • ব্যান্ডেজ করার নিয়ম: ব্যান্ডেজ এর ছোটো প্রান্তটি কেটে যাওয়া অঙ্গ এবং ড্রেসিং প্যাডের চারদিকে একবার মুড়িয়ে নিন। অপর প্রান্তটি হাতের চারদিকে ঘুরিয়ে আনুন যাতে পুরো প্যাডটি ঢেকে যায়। দুটো প্রান্ত কাছাকাছি এনে প্যাডের ওপরে বেঁধে দিন। এমনভাবে বাঁধবেন যেন জায়গাটি হালকা চাপে থাকে এবং ব্যান্ডেজের গিঁট খুলে না যায় ।

৪. নিয়মিত ড্রেসিং বদলে নিন

  • প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত ড্রেসিং বদলাতে হবে। ড্রেসিং ভিজে গেলে কিংবা ময়লা হয়ে গেলে বদলে ফেলতে হবে। ড্রেসিংটি পানিমুক্ত রাখতে গোসল করার আগে পানিনিরোধক কিছু (যেমন: প্লাস্টিক, পলিথিন) দিয়ে ড্রেসিংটি মুড়ে নিতে হবে।
  • কিছুদিন পর ক্ষত সেরে গেলে ড্রেসিং খুলে ফেলতে পারেন। উল্লেখ্য, ড্রেসিং রক্তে ভিজে গেলে সেটি না সরিয়ে, সেটির উপর অন্য আরেকটি ড্রেসিং দিয়ে ক্ষতস্থানে চেপে রাখুন। এতেও যদি রক্ত পড়া বন্ধ না হয়, দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যান।

৫. ব্যথানাশক ঔষধ সেবন

  • ক্ষতস্থানে ব্যথা হলে ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করা যাবে। যেমন: প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন।
  • যদি অনেক বেশি রক্তক্ষরণ হতে থাকে, রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান কিংবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করুন।

যখন ডাক্তার এর কাছে যাবেন

যদি ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অথবা যদি মনে করেন ইতোমধ্যে ইনফেকশন হয়ে গিয়েছে, দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান।

যেসব লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন ক্ষততে ইতোমধ্যে ইনফেকশন হয়ে গিয়েছে—

  • ক্ষতের অংশটি ফুলে যাওয়া
  • ক্ষতস্থানের ভেতরে কিংবা চারপাশে পুঁজ হওয়া
  • ক্ষতস্থানে থেকে তরল কিছু বের হওয়া
  • ক্ষতস্থানটি লাল এবং গরম হয়ে যাওয়া
  • ক্ষততে ব্যথা বাড়া
  • থুতনির নিচে, ঘাড়ে, বগলের নিচে অথবা কুঁচকিতে থাকা গ্রন্থিগুলো বিচির মতো ফুলে যাওয়া
  • অসুস্থ অনুভব করা
  • জ্বর আসলে বা শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪° ফারেনহাইট (৩৮° সেলসিয়াস) এর চেয়ে বেশি হলে।

যা করবেন না

  • খালি চোখে দেখে পরিষ্কার মনে হলেও ক্ষতস্থানকে জীবাণুমুক্ত ভাববেন না। অবশ্যই ক্ষতস্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
  • ক্ষতস্থানের ওপর ফুঁ দিবেন না।
  • ক্ষত গভীর হলে রক্তপাত কমে যাওয়ার পর তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন না। গভীর ক্ষতের সঠিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান।
  • ক্ষতস্থানের গভীরে ঢুকে যাওয়া কোনো কিছু টেনে বের করার চেষ্টা করবেন না।
  • ক্ষতস্থানে বড় কিছু ঢুকে গেলে তা বের করার অথবা তাতে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। বরং ডাক্তারের কাছে যান।

যেসব লক্ষণ দেখা গেলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে—

  • ক্ষতস্থান অনেক বড় বা গভীর হলে
  • ক্ষত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ না হলে
  • যদি ক্ষতের অংশে ক্রমাগত অবশ অনুভূতি থাকে
  • শরীরের কোনো অঙ্গ নাড়াতে অসুবিধা হয়
  • চেহারার কোথাও গুরুতরভাবে কেটে গেলে। পরবর্তীতে দাগ হয়ে যাওয়া এড়াতে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন
  • হাতের তালুতে কেটে গেলে তা দেখে ইনফেকশন হয়েছে মনে হলে
  • বড়শি কিংবা মরিচা-ধরা কোনো বস্তু (যেমন: পেরেক, ছুড়ি) দিয়ে কেটে গেলে কিংবা মাংস ফুটো হয়ে ক্ষত হলে
  • ধমনী কেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়লে। এই রক্ত টকটকে লাল রংয়ের হয়। সাধারণত এই ধরণের রক্তপাত প্রাথমিক চিকিৎসায় বন্ধ করা কঠিন
  • এ ছাড়া টিটেনাস বা ধনুষ্টংকার এর সবগুলো টিকা নেওয়া না থাকলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

হাসপাতালে ভালোভাবে পরীক্ষা করা হবে ক্ষতস্থানটিতে কোনো ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। ক্ষতস্থানে টিটেনাস এর ইনফেকশন প্রতিরোধে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির টিকা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ড্রেসিং করার আগে ক্ষতস্থানটি বন্ধ করার জন্য এতে সেলাই কিংবা বিশেষ আঠা লাগানোর প্রয়োজন হতে পারে।

ইনফেকশন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকলে সাধারণত ক্ষতস্থানটি বন্ধ করা হয় না। এক্ষেত্রে ক্ষতটি বিশেষভাবে ড্রেসিং করে দেওয়া হয়।

কাটা-ছেঁড়ার জটিলতা

  • কখনো কখনো কাটা-ছেঁড়া থেকে নানান রকম জটিলতা তৈরি হতে পারে। যেমন: ইনফেকশন রক্তে ছড়িয়ে পড়া, পচন ধরা, অঙ্গচ্ছেদ, ক্ষতস্থানে কাজ করার ক্ষমতা হারানো, স্নায়ু কিংবা কোনো অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।
  • বিভিন্ন শারীরিক অবস্থায় (যেমন: ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তনালীর রোগে) ক্ষতস্থানে রক্ত প্রবাহ কম হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ক্ষত সারতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগতে পারে। যদি মনে হয় দীর্ঘদিন পরেও ক্ষত সারছে না, ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

জটিলতা প্রতিরোধে টিকা
কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার টিটেনাস টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। বিশেষত যদি—

  • আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি টিটেনাস টিকার কোর্স সম্পন্ন না করে
    অথবা বিগত ৫ বছরে টিটেনাসের কোনো টিকা না নিয়ে থাকে
    এবং ক্ষতটি গভীর কিংবা ক্ষততে ইনফেকশন হয়েছে মনে হয়
    আঘাত পাওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই টিকা নেওয়া উচিত। ক্ষতের ধরনের ওপর নির্ভর করে টিটেনাস টিকার পাশাপাশি ‘টিটেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন’ নামক আরেক ধরনের ইনজেকশন নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
  • কোনো পশুর (যেমন: কুকুর বা বিড়ালের) কামড় থেকে ক্ষত হলে জলাতঙ্ক বা র‍্যাবিস নামক রোগের টিকা দেওয়া লাগতে পারে।
  • টিটেনাস এর টিকা না নেওয়া থাকলে যেকোনো বয়সের ব্যক্তি এটি নিতে পারে।

কাঁটা-ছেড়া প্রতিরোধে সাবধানতা

  • কিছু সাবধানতা মেনে চললে কাটা-ছেঁড়ার সম্ভাবনা অনেকটুকু কমিয়ে আনা যায়। যেমন—
  • কাটা-ছেঁড়া থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ছুরি, কাঁচি, ধারালো বস্তু, আগ্নেয়াস্ত্র ছোটো বাচ্চাদের নাগালের বাইরে রাখুন। সঠিক বয়সের পর বাচ্চাদের এগুলোর নিরাপদ ব্যবহার শেখান।
    খেলাধুলার সময় প্রয়োজনীয় পোশাক ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরুন।
    খেয়াল রাখুন পরিধেয় জুতার তলা যেন শক্ত হয়। পেরেক কিংবা চোখা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসলে জুতা যেন ছিঁড়ে বা ফুটো হয়ে না যায়।
    কোনো ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার আগে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পোশাক ও জুতা পড়ুন।
    পিচ্ছিল কোনো পদার্থ মেঝেতে পড়লে দ্রুত মুছে ফেলুন।

মেডিকেল রাইটারঃ ডা. মহিউদ্দিন কাউসার। সার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories