মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করছেন ! জেনে নিন ক্ষতি কতটা ! সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, জরুরি বিভাগসহ সব সেবা বন্ধ ঢামেকে চিকিৎসা সেবায় অবহেলা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা -স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্বাস্থ্যের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ডব্লিওএইচওর ঢাকা মেডিকেলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ! পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক মানের সুপার-স্পেশালিটি হেলথ-কেয়ার “নর্থ পয়েন্ট মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল-এনপিএমসিএইচ” বাজারে ৬৫ হাজার টাকার ‘ভুয়া’ ক্যান্সার ইনজেকশন দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগে

মাঙ্কিপক্স: সমকামী পুরুষদের যৌন সঙ্গী কমানোর পরামর্শ ডব্লিউএইচও’র

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস (ফাইল ছবি)

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই বিশ্বের বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে আরেক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স। ফলে এই ভাইরাস নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ। এমনকি সংক্রামক এই ভাইরাসটি কিভাবে একে-অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়েও রয়েছে নানা মত।

এই পরিস্থিতিতে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ মোকাবিলায় পুরুষদের সেক্স পার্টনারের সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউইচও)। বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বুধবার পুরুষদের প্রতি তাদের যৌন সঙ্গীর (সেক্স পার্টনার) সংখ্যা সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মূলত যেসব পুরুষ অন্য পুরুষদের সাথে যৌন সম্পর্ক করে তাদের প্রতি এই আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপক্সে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছেন এবং আক্রান্তদের বেশিরভাগই পুরুষ। সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে গত শনিবার ডব্লিউএইচও মাঙ্কিপক্সকে গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি বা বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসাবে ঘোষণা করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, মাঙ্কিপক্সের এই প্রাদুর্ভাব কমানো যায়। তবে সবচেয়ে ভাল পন্থা হল ঝুঁকির রাস্তা থেকে সরে আসা।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ‘নিজের জন্য ও অপরের জন্য নিরাপত্তা রাখা ও নিজের সেক্স পার্টনারের সংখ্যা কমানো’ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই বার্তা সেইসব পুরুষদের জন্য ‘যারা পুরুষসঙ্গীদের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হন।’

ডব্লিউএইচও’র প্রধান আরও বলেন, ‘যদি আমরা (যৌনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে) আর একটু সংযমী ও সচেতন হই, সেক্ষেত্রে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব। এই রোগ থেকে আত্মরক্ষা অনেকটাই নির্ভর করছে নিজের ওপর।’

সম্প্রতি বিশ্বের একাধিক দেশে হু হু করে বাড়ছে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা। ডব্লিউএইচও’র তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকান দেশগুলোর বাইরে অন্যান্য দেশে গত মে মাসের শুরু থেকে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে।

টেড্রোস বুধবার বলেছেন, বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপক্সে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছেন এবং সংক্রমণ ছড়িয়েছে ৭৮টি দেশে। আক্রান্ত এসব রোগীদের ৭০ শতাংশই ইউরোপের এবং ২৫ শতাংশ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের।

এর আগে চলতি জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, মাঙ্কিপক্সের ৯৫ শতাংশ সংক্রমণ ছড়িয়েছে যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়ে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বে এটিই এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় গবেষণা।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত ৯৮ শতাংশই সমকামী বা উভকামী পুরুষ। আক্রান্তদের ৪১ শতাংশের এইচআইভি ছিল এবং গড় বয়স ৩৮ বছর। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত এসব মানুষের আগের তিন মাসে তাদের যৌন সঙ্গীর গড় সংখ্যা ছিল পাঁচ জন।

এছাড়া ভাইরাসে সংক্রমিতদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার আগের মাসের মধ্যে সেক্স পার্টি বা সানাসের মতো সেক্স-অন-সাইট ভেন্যুতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসজনিত অসুখ। স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণির একটি ভাইরাস এ রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দু’টি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে— মধ্য আফ্রিকান ও পশ্চিম আফ্রিকান।

রোগটির বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। প্রথম পর্যায়ে রোগীর জ্বর আসে, পাশাপাশি শরীরে দেখা দেয় ফোস্কা ও অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি ওঠে। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে হাত ও পায়ের তালুতে।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, এই ভাইরাল সংক্রমণের সাথে গুটিবসন্তের সম্পর্ক আছে। তবে সংক্রমণ সাধারণত মৃদু হয়। বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকান ভাইরাসের প্রজাতিটি মৃদু ধরনের; যা যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হয়েছে। এই প্রজাতিতে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার প্রায় ১ শতাংশ। বেশিরভাগ মানুষ দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ ফলো করুন

Categories